
হযরত মওলানা সৈয়দ আবদুল গণী কাঞ্চনপুরী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী – সংগ্রহেঃ ডলি আক্তার মাইজভান্ডারী
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম!
আগামী ২২ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,বুধবার।
মহান ৬ই কর্তিক ১৪৩০ বাংলা।
বাংলাদেশের জমিনে প্রবর্তিত একমাত্র ত্বরিকা, বিশ্বসমাদৃত ‘ত্বরিকা-ই-মাইজভাণ্ডারীয়া’র প্রবর্তক যুবদাতুল আরেফিন, সুলতানুল মুকাররবীন, ফরদুল আফরাদ গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ)’র অন্যতম খলিফা, তৎকালীন কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে গোল্ড মেডালিস্ট প্রাপ্ত জগৎ শ্রেষ্ঠ আলেম, সুফি আরেফ কবি- দিওয়ানে মকবুল,প্রেম দর্পন,আত্ন-পাঠ,সহ অসংখ্য কিতাব এর লিখক, তাসাওউফ পরিমন্ডলের তথ্যবহুল মাইজভাণ্ডারীয়া ত্বরিকার সুপ্রসিদ্ধ কিতাব ‘আয়নায়ে বারী’ প্রণেতা,[গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী কর্তৃক “মকবুল” খেতাবপ্রাপ্ত ] বাহরুল উলুম মকবুলে গাউসুল আযম হযরত মাওলানা সৈয়দ আবদুল গণি কাঞ্চনপুরী মাইজভাণ্ডারী (রহঃ)-এর ৯৮তম পবিত্র ওরশ শরিফ সফল হোক।
সংক্ষিপ্ত জীবনী:
হযরত মওলানা সৈয়দ আবদুল গণী কাঞ্চনপুরী (রহঃ)- ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত ধুরুং গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হযরত শাহ্সুফি সৈয়দ মাওলানা হাফেজ আবদুল ওহাব (রহঃ), দাদার নাম হযরত শাহ্ সুফি সৈয়দ মাওলানা সাদেক (রহঃ), পর দাদার নাম হযরত শাহ্ সুফি সৈয়দ মাওলানা মুহাম্মদ বুরহান উদ্দিন (রহঃ) এইভাবে পূর্বপুরুষ সৈয়দানা মওলানা ইমাম জয়নাল আবেদীন (রাদ্বিঃ)-এর নসল মোবারক হয়ে রাসূল করিম (দঃ) পর্যন্ত সম্পর্কিত। মাওলানা সৈয়দ বুরহান উদ্দিন (রহঃ) আরব হতে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশ সফর করে পূর্ব বাংলার চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত ধুরুং ইউনিয়নে বসবাস শুরু করেন। তাঁর সুযোগ্য পৌত্র ছৈয়দ মাওলানা আবদুল ওহাব (রঃ) তৎকালীন ধর্মভীরু জমিদার বোচা উকিল প্রতিষ্ঠিত কাঞ্চন পুর জামে মসজিদে ইমাম হিসাবে নিয়োজিত হন। তথায় তিনি স্বপরিবারে বসতি স্থাপন করেন। তাঁর পরিবারে চারটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেন।
(১) সৈয়দ আবদুল আজিজ
(২) সৈয়দ আবদুল গণী
(৩) সৈয়দ আবদুল হাদী
(৪) সৈয়দ আবদুল ছালাম “তাঁরা চার ভ্রাতাই কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াস এবং গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। যার দরুন তাঁরা সকলে বাহরুল উলুম হিসাবে পরিচিত হন। সৈয়দ মাওলানা আবদুল আজিজ (রহঃ) বোচা উকিল বাড়িতে ইন্তেকাল করেন ইন্না….। বাকী তিন ভাই হুজুর গাউসুল আজম হযরত মওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র মুরিদ ও খলিফা পদে নিযুক্ত হন। অগনিত মানব-দানব তাঁদের মাধ্যমে গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারীর সিলসিলা মতে হেদায়তের আলো পেয়েছেন। এবং এখনও তাঁদের পবিত্র রওজা শরিফে দৈনন্দিন বহু লোকের ভিড় হয়। তাঁরা কোরান হাদিস, ইজমা, কিয়াস-এর প্রমাণ সহকারে মাইজভাণ্ডারীয়া ত্বরিকায় উর্দু, ফার্সি, আরবী, বাংলায় বহু কিতাব রচনা করেন। আল্লামা হযরত আবদুল গণী কাঞ্চনপুরী (রহঃ)’র জীবন চরিত, হযরত রসূল করিম (দঃ)-এর সুন্নত মোতাবেক ছিল এবং তিনি কলিকাতা আলিয়া মাদরাসা থেকে মুফতি ও মোফাসসির এবং মোহাদ্দিস সনদ লাভ করে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামে আলিরমার জামে মসজিদে ইমাম হিসাবে যোগদান করেন। সর্বপ্রথমে তিনি বোচা উকিল প্রতিষ্ঠিত জামে মসজিদে ইমামতি গ্রহণ করেন এবং সেখানে মাইজভাণ্ডারীয়া ত্বরিকা বিরোধীদের সাথে তাঁর মতানৈক্যের কারণে ভিন্ন মতাবলম্বী লোকের সমাগমে তাঁকে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি কোন কথাবার্তা ব্যতিত মসজিদ থেকে সিঁড়ি বেয়ে এবং এক জোড়া খরম পায়ে সোজা পুকুরের পানির উপর দিয়ে পূর্ব পাড়ে চলে আসেন এবং বোচা উকিল বাড়ি থেকে কিছু পূর্বে এসে বসতি স্থাপন করেন। এখানে আলিরমার জামে মসজিদে ইমাম নিযুক্ত হন এবং সেখানে প্রায় ২৪/২৫ বৎসর ইমামতি করেন। এবং কোরআন-হাদিস দ্বারা গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারীর ত্বরিকা প্রচার ও প্রসার করে তিনি ১৩৩৪ বাংলা ৬ কার্তিক ১৯২৭ খৃষ্টাব্দ ২৩ অক্টোবর ২৬ রবিউস্ সানি শনিবার দুনিয়াবি সফর শেষ করেন।
Leave a Reply