আউলিয়ায়ে কেরাম, সুফিবাদ ও উগ্রবাদ: ইতিহাস, ষড়যন্ত্র ও সুন্নি জনতার করণীয়
– মোঃ ইব্রাহিম মিয়া
✦ ভূমিকা
ইসলাম শান্তির ধর্ম। রাসুলুল্লাহ (দ.) মানুষকে ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সহনশীলতার শিক্ষা দিয়েছেন। এই মহান আদর্শকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব যাঁরা পালন করেছেন, তাঁরা হলেন আউলিয়ায়ে কেরাম — আল্লাহর প্রিয় বন্ধু, রাসুলের (দ.) প্রকৃত অনুসারী, এবং সুফিবাদী আধ্যাত্মিকতার ধারক।
এই উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে তরবারির জোরে নয়, বরং আখলাক, ভালোবাসা ও কুরআনের আলো দিয়ে। অথচ আজ, তথাকথিত “তাওহিদি জনতা”-র নামে এক শ্রেণির উগ্রবাদী ইসলামের এই মোবারাক ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। তারা মাজার ধ্বংস করে, দরবারে আগুন দেয়, কবর থেকে লাশ তুলে অপমান করে, এমনকি ভাওয়াল শিল্পী, হামদ-নাত, কাওয়ালী — এ জাতীয় আধ্যাত্মিক ইসলামী সংস্কৃতিকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।
এই প্রবন্ধে আমরা ইতিহাসের আলোকছায়ায় তুলে ধরব: উগ্রবাদীদের ষড়যন্ত্র, ওহাবি মতবাদের উৎপত্তি, সুফিবাদের তাৎপর্য এবং সুন্নি জনতার করণীয়।
তরবারি নয়, ভালোবাসার দাওয়াতেই ইসলামের বিস্তার
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে আউলিয়াগণের দাওয়াত, প্রেম ও খেদমতের মাধ্যমে — যুদ্ধ বা রাজনীতির মাধ্যমে নয়।
যেমন:
খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহ.),
শাহ সুফি নিজামুদ্দিন আউলিয়া (রহ.),
দাতা গঞ্জ বক্স (রহ.),
শাহ জালাল (রহ.),
বাবা আদম শহীদ (রহ.),
খানজাহান আলী (রহ.),
শাহ মখদুম রূপোশ (রহ.) —
তাঁরা ছিলেন সেই আল্লাহওয়ালা দরবেশ, যাঁরা দরিদ্র ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ভালোবাসা তাওহিদ ও রেসালাতের দাওয়াত দিয়েছেন।
তাঁদের দরবার ছিল জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের মিলন কেন্দ্র ও আশ্রয়স্থল, তাঁদের আখলাক ছিল ইসলাম প্রচারের হাতিয়ার। তাঁদের মাজার কেবল কবর নয়, বরং ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা ও মানবতার বাতিঘর।
বাংলার আধ্যাত্মিক বাতিঘরগণ
বাংলার আকাশে যাঁরা আলো ছড়িয়েছেন আধ্যাত্মিকতার আলোকে, তাঁদের মধ্যে বিশেষভাবে স্মরণীয়:
আওলাদে রাসুল (দ.) হযরত গাউসুল আজম শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (রহ.) — যিনি আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ ভিরু হতে শিখিয়েছেন ও মানুষকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছানোর পথ নির্দেশনা দিয়েছেন। মাইজভাণ্ডারী তরিকার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাসাউফকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও সামাজিক আন্দোলনের রূপ দিয়েছেন।
হযরত গাউসুল আজম শাহ সুফি সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভাণ্ডারী (রহ.) — যিনি আল্লাহর প্রেম, মানবসেবা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মাইজভাণ্ডারী তরিকার বিকাশ ঘটান এবং আধ্যাত্মিক নেতৃত্বে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
খাজা এনায়েতপুরী (রহ.) — যিনি তরিকতের গভীরতা ও আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছানোর পথ দেখিয়েছেন।
তাঁদের দরবারসমূহ আজও জ্যোতির্ময়, যেখানে আধ্যাত্মিক শিক্ষা, চরিত্রগঠন ও আত্মিক পরিশুদ্ধির শিক্ষা দেওয়া হয়।
তাসাউফ ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার গুরুত্ব:
তাসাউফ অর্থ—আত্মশুদ্ধির পথ, হৃদয়ের জিহাদ। এটি শুধু একটি মতবাদ নয়, বরং ইসলামি জীবনের আত্মিক মেরুদণ্ড।
তাসাউফের মূল শিক্ষা:
১) তাযকিয়াতুন নাফস (আত্মশুদ্ধি) — অহংকার, হিংসা, লোভ থেকে মুক্তি
২) মোহব্বাতে ইলাহি (আল্লাহর প্রেম) — অন্তর দিয়ে আল্লাহকে অনুভব করা
৩)খেদমতে খালক (মানবসেবা) — মানুষকে ভালোবাসা, দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানো
ফানা-ফিল্লাহ — নিজের অস্তিত্ব বিলীন করে আল্লাহর সাথে সংযুক্ত হওয়া।
তাসাউফ মানুষকে গড়ে তোলে হৃদয়বান, সহনশীল, সদয় ও আল্লাহভীরু — একজন আদর্শ মুসলমান ও পরিশুদ্ধ উত্তম মানুষ হিসেবে।
সুফিবাদ: ভালোবাসা ও মানবতার আন্দোলন:
সুফিবাদ মানে বিভাজনের নয়, বরং প্রেম ও সহমর্মিতার ভিত্তি। এখানে নেই কাউকে “শিরকপন্থী” বা “বিদআতি” বলার ঔদ্ধত্য। সুফিগণ কাউকে কাফের বলেননি, বরং সবাইকে আল্লাহর রহমতের দাওয়াত দিয়েছেন।
কারবালা ও উগ্রবাদের সূচনা:
ইসলামের ইতিহাসে উগ্রতার প্রথম রূপ আমরা দেখি কারবালায়, যখন ইয়াজিদের বাহিনী ইমাম হোসাইন (আ.)-এর কাফেলার জন্য পানি বন্ধ করে, তাঁকে শহীদ করে এবং তাঁর পরিবার তথা আহলে বাইয়াতকে অসম্মান করে।
আজ যারা মাজার ভাঙে, লাশ তোলে, আগুন দেয় — তারা পথভ্রষ্ট;বরং ইয়াজিদের মানসিকতার বাহক।
ওহাবি মতবাদ: বিভাজনের রাজনীতি
১৭৪৪ সালে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওহাব ও সৌদ বংশ মিলে ওহাবি মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে। এ মতবাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল:
মাজার ধ্বংস ও আউলিয়াদের অবমাননা,
“বিদআত” ও “শিরক” নাম দিয়ে মুসলিমদের বিভক্তি সৃষ্টি,
সুফিবাদকে নির্মূল করে কঠোর রাজনৈতিক ইসলাম কায়েম।
ইতিহাসের কিছু করুণ অধ্যায়:
১৮০২: কারবালায় ইমাম হোসাইনের (আ.) মাজারে হামলা, সহস্রাধিক মানুষ শহীদ।
১৮০৬: মক্কা-মদিনা দখল করে জান্নাতুল বাকি ধ্বংস।
১৯২৫: সৌদি শাসনে ফের সমস্ত মাজার গুঁড়িয়ে ফেলা।
এই ইতিহাস থেকেই অনুপ্রাণিত আজকের বাংলাদেশের মাজারবিরোধী উগ্রবাদীরা।
✦ বাংলাদেশে চলমান ষড়যন্ত্র
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে:
দরবারে অগ্নিসংযোগ
লাশ তুলে অপমান
মানত, চেরাগ, কাওয়ালী বন্ধের অপচেষ্টা
সুফিবাদী সংগীত ও বাংলার ইসলামী কৃষ্টিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র।
এটি নিছক মতবিরোধ নয়, বরং বাংলার শান্তিপূর্ণ ইসলামী ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন।
মাজার বিদ্বেষের মূল কারণ
১. ধর্মীয় অজ্ঞতা ও সংকীর্ণতা
২. উগ্র ওহাবি-সালাফি মতবাদের প্রভাব
৩. রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মের অপব্যবহার
৪. মধ্যপ্রাচ্যের বৈদেশিক অর্থ ও মতবাদ ছড়ানো
৫. বাংলার নিজস্ব ইসলামী কৃষ্টির শত্রুতা।
সুন্নি সুফিবাদী জনতার করণীয়
ঐক্যবদ্ধ হোন — মাযহাব, তরিকত, সংগঠনের বিভেদ ভুলে এক প্ল্যাটফর্মে আসুন।
তরুণদের জাগ্রত করুন — স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় আউলিয়াদের জীবন ও তাসাউফ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে আন্দোলন গড়ে তুলুন।
সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তুলুন:
ইসলাম শুধুই একটি ধর্মীয় বিধান নয়, এটি একটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। বাংলার মাটিতে ইসলাম এসেছে আউলিয়ায়ে কেরামের আখলাক, আধ্যাত্মিকতা ও সুরেলা সংস্কৃতির মাধ্যমে। সেই আধ্যাত্মিক সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতেই আজ উগ্রবাদী গোষ্ঠী চক্রান্তে লিপ্ত। তাই প্রয়োজন একটি সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ ও জাগরণ।
১. সুফি সংগীত ও ভক্তিমূলক ধারার পুনর্জাগরণ:
কাওয়ালী, হামদ, নাত, মনকব্বত, ভাওয়াল গান — এগুলোর মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়।
দরবার ভিত্তিক সংগীতচর্চাকে উৎসাহ দিন। প্রাচীন ভক্তিগীতি নতুন আঙ্গিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করুন।
সামাজিক মিডিয়া, ইউটিউব, -এর মাধ্যমে এই গানগুলো বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিন।
২. ফোক ও আধ্যাত্মিক নাট্যচর্চা:
সুফিদের জীবন, দরবেশদের ত্যাগ, ইসলাম প্রচারের ইতিহাসকে নাটক-নাটিকা, শর্ট ফিল্ম ও পথনাটকের মাধ্যমে উপস্থাপন করুন।
বিভিন্ন মাদ্রাসা, স্কুল ও তরুণ সংগঠনকে এ কাজে সম্পৃক্ত করুন।
৩. দরবার কেন্দ্রিক সাহিত্য ও ললিত শিল্পচর্চা:
আউলিয়াগণের জীবনী, তাসাউফ ভিত্তিক কবিতা, গজল, স্মৃতিচারণমূলক রচনাকে ছড়িয়ে দিন।
দরবার শরীফভিত্তিক সাহিত্য প্রতিযোগিতা, পোস্টার, চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদির আয়োজন করুন।
৪. আধ্যাত্মিক ফ্যাশন ও পবিত্র নিদর্শনসমূহ সংরক্ষণ:
ফকিরি পোশাক, ময়নাতরী টুপি, সুফি চেরাগ — এসব শুধু ঐতিহ্য নয়, আমাদের আত্মপরিচয়ের অংশ। এগুলোকে বিকৃত না করে আধুনিকভাবে উপস্থাপন করুন।
দরবার ও আউলিয়াগণের ব্যবহৃত স্মৃতিচিহ্ন, হস্তলিখিত কিতাব ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষণের উদ্যোগ নিন।
৫. ইসলামী সাংস্কৃতিক জাগরণে মিডিয়া ব্যবহার:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুফি তরিক্বতভিত্তিক ভিডিও, আলোচনা, কবিতা, গজল ছড়িয়ে দিন।
উগ্রবাদী প্রচারণার জবাব দিন সুন্দর ভাষা ও আধ্যাত্মিক কনটেন্ট দিয়ে — যেমন ভিডিও বার্তা, শর্ট ফিল্ম , ইনফোগ্রাফিক ইত্যাদি।
সুন্নি সুফিবাদী জনতার করণীয় :
সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তুলুন :
সুফি সংগীত, হামদ-নাত, কাওয়ালী, ভাওয়াল গান, আধ্যাত্মিক নাটক — এসবের মাধ্যমে হৃদয়ে আল্লাহ ও রাসুল (দ.)-এর প্রেমের জাগারন সৃষ্টি করুন । এ সংস্কৃতি কেবল বিনোদন নয়, এটি ঈমানের আবহ তৈরি করে।
উগ্র মতাদর্শের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান —
কেবল বক্তৃতা বা ফেসবুক পোস্ট নয়, প্রয়োজন সাংগঠনিক, সামাজিক ও আইনগত প্রতিরোধ। প্রত্যেক দরবার ও সুন্নি সংগঠনকে নিজস্ব গবেষণা ও মিডিয়া ইউনিট গড়ে তুলতে হবে।
দরবার ও মাজার রক্ষা করুন:
প্রতিটি দরবারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আইনগত সহায়তা ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করতে হবে। দরবারের কার্যক্রম যেন স্বচ্ছ ও জনবান্ধব হয় — সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।
আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করুন —
বিশ্বব্যাপী সুফি সংস্থা, মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তধর্মীয় সংলাপের প্ল্যাটফর্মে বাংলার দরবার ও সুফিবাদী ঐতিহ্যের গুরুত্ব তুলে ধরুন। ইসলাম যে শান্তির ধর্ম, তা আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রমাণ করুন।
প্রজন্ম গঠনে মনোযোগ দিন
তাসাউফ ও আউলিয়াদের জীবনাদর্শকে আধুনিক ভাষায় উপস্থাপন করে তরুণদের মন ও মেধা জয় করুন। ইউটিউব, টিকটক, শর্ট ফিল্ম, গানের মাধ্যমে সত্যের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।
✦ উপসংহার
বাংলার মাটিতে ইসলাম এসেছে আউলিয়ায়ে কেরামের ভালোবাসা, খেদমত, তাওহিদ ও রেসালাতের দাওয়াতের মাধ্যমে। তাঁদের রেখে যাওয়া আধ্যাত্মিক ধারা—তাসাউফ—এখানে শুধু একটি ধর্মীয় পথ নয়, বরং একটি মানবিক সংস্কৃতি।
আজ সেই শান্তিপূর্ণ সুফি ঐতিহ্যের উপর আঘাত হানছে একদল উগ্রবাদী, যাদের হাতে ইসলাম নেই, আছে বিভেদ, বিদ্বেষ ও সহিংসতা। এই অপচেষ্টা রুখে দিতে হলে দরকার—সুন্নি সুফিবাদী জনতার ঐক্য, সাংস্কৃতিক জাগরণ, তরুণ প্রজন্মকে জাগ্রত করা, এবং আধ্যাত্মিক ইসলামের সঠিক পরিচয় ছড়িয়ে দেওয়া।
আমাদের দরকার নতুন এক ভাষা, নতুন এক কণ্ঠ—যেখানে ইসলাম মানে ভালোবাসা, দরবার মানে আলোর উৎস, আউলিয়া মানে আল্লাহ প্রাপ্তির জীবন্ত পথ নির্দেশক ।
> ❝আমরা হুসাইনের উত্তরসূরি, আমরা আউলিয়ার দীন ও দীপ্তির পথের অনুসারী। শান্তি চাই, কিন্তু আত্মমর্যাদায় আপসহীন।❞
আজকের দিনে সুন্নি জনতার করণীয় হলো:
বিভাজন ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া
তাসাউফ ভিত্তিক সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবন:
মাজার ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের রক্ষা ও সম্প্রসারণ
নতুন প্রজন্মকে আত্মিক শিক্ষায় গড়ে তোলা
আসুন, আমরা সবাই মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলি যেখানে থাকবে আউলিয়ার দোয়া, দরবেশের দিকনির্দেশনা, ইসলামের আধ্যাত্মিক সৌন্দর্য ও মানবতার দীপ্তি।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক, মোঃ ইব্রাহিম মিয়া
দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি বিএসপি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
Leave a Reply